আবু ইউসুফ মিন্টু :
বিগত এক বছরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এর মধ্যে তিন দফা বৈঠক করেও কাজ শুরু করা যায়নি বিলোনিয়া ইমিগ্রেশন সেন্টারের। ২০১৭ সালের ১৭ নভেম্বর ওয়ার্ক অর্ডারের পর ২০১৮ সালের ৩ জানুয়ারি কাজ শুরু করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। কিন্তু ১২ জানুয়ারি ভারতের বর্ডার নিরাপত্তা বাহিনী বিজিবির মাধ্যমে কাজ বন্ধ করে দেয়। এদিকে ভারতের অংশে তারা কাঁটার বেড়া ঘেঁষে ইমিগ্রেশন সেন্টার নির্মাণ কাজ করছে। যার দূরত্ব সীমান্ত পিলার থেকে ৩০ ফুটের মতো হবে। তাতে বিজিবি বাধা দিলেও তারা কর্ণপাত করেনি। সে অংশের ইমিগ্রেশন সেন্টার নির্মাণ কাজ চললেও বাংলাদেশে তা এক বছরেরও অধিক সময় ধরে থেমে আছে।
দেশের অন্যতম এই স্থল বন্দর এলাকা দিয়ে রপ্তানী কার্যক্রমের পাশাপাশি ভারত ও বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক যাত্রী প্রতিদিন যাতায়াত করছে। দুদেশের যাত্রী যাতায়াতের কারণে বাংলাদেশ বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় হচ্ছে। মুহুরীঘাট হিসেবে পরিচিত এই বিলোনিয়া স্থল বন্দরের পুলিশ ইমিগ্রেশন এ কর্মরত পুলিশ ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের অফিস, আবাসন সমস্যা সমাধানের জন্য ইমিগ্রেশন ভবন নির্মাণ কাজের প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়।
বিলোনিয়া ইমিগ্রেশন সেন্টারের কাজ বাস্তবায়িত হচ্ছে গণপূর্ত বিভাগের মাধ্যমে। দরপত্র অনুযায়ী ছয় তলা ভবনটির তিন তলা পর্যন্ত কাজ এখন সম্পন্ন করার কথা ছিল। তিন কোটি ২৩ লাখ টাকা ব্যয় ধরে কাজ শুরু হওয়া এ ভবনের পাইলিংয়ের জন্য মাটি কাঁটা শুরুর ১০ দিনের মাথায় কাজ বন্ধ করে দেয় বিএসএফ। পাইলিংয়ের জন্য খনন করা এলাকাটি এখন পুকুরে পরিণত হয়েছে। সেখানে মাছ চাষ করছে ইমগ্রেশন পুলিশের সদস্যরা। কবে নাগাদ কাজ শুরু হবে তা ঠিক করে বলতে পারেনি কোন সংস্থা।
সরেজমিন পরিদর্শনে স্থানীয় বিজিবি, ইমিগ্রেশন পুলিশ ও ফেনী গণপূর্ত সূত্রে জানা গেছে, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত বিলোনিয়া দিয়ে স্বাধীনতার পর থেকে ভারত বাংলাদেশে উভয় দেশের নাগরিকরা যাতায়াত করতো। বিশেষ করে বিলোনিয়ায় ট্রেন চলাচলের সুবাধে ২ দেশের মানুষের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন গড়ে উঠে। বর্তমানে বিলোনিয়ার ট্রেন না থাকলেও ফেনী স্টেশন থেকে বিলোনিয়া যেতে ঘন্টাখানেক সময় লাগে। তাই চট্টগ্রাম বিভাগের অনেকেই যাতায়াতে বিলোনিয়া ইমিগ্রেশন ব্যবহার করে। বিশেষ করে দক্ষিণ ত্রিপুরা যেতে আগ্রহীরা এ পথ বেশি ব্যবহার করে।
বিলোনিয়া স্থল বন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক জানান, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ভারতে যায় ৩ হাজার ৯৮ জন বাংলাদেশী। আর ভারতীয় ও অন্যান্য দেশের ৯১৬ জন বিদেশি বাংলাদেশে আসেন। এর মাধ্যমে ভ্রমণ কর বাবত বাংলাদেশ সরকার আয় করেছে ১৯ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। চলতি অর্থবছরের ৭ মাসে এই লক্ষ্যমাত্রা আরো ছাড়িয়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এদিকে স্থায়ী ইমিগ্রেশন সেন্টার নির্মাণ হলে এ পথে ২ দেশের মানুষের যাতায়াত আরো বাড়বে জানিয়ে বিলোনিয়া ইমিগ্রেশন সেন্টারের ইনচার্জ এসআই মাহমুদ জানান, বর্তমানে বিলোনিয়া ইমিগ্রেশন নামমাত্র টিকে রয়েছে। স্থায়ী ভবন তৈরি হলে এ এলাকা দিয়ে দুই দেশের নাগরিকের পাশাপাশি বিদেশিদের আসা যাওয়া আরো বেড়ে যাবে।
বিলোনিয়ার মজুমদারহাট বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মো. আরফান আলী বলেন, দুই দেশের সমঝোতার মাধ্যমে ৩শ’ ফুটের মধ্যে ইমিগ্রেশন সেন্টার নির্মাণ করা হবে। এ বিষয়ে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মাঝে তিনটি পতাকা মিটিং সম্পন্ন হয়েছে। দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ে এ বিষয়টি জানিয়ে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এলেই কাজ শুরু হবে।
ফেনী গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রফিকুল আলম জানান, দেড়শ গজের নিয়ম মেনেই কাজ শুরু করা হয়েছিল। কিন্তু বিএসএফের বাধায় এক বছরেরও অধিক সময় ধরে কাজ বন্ধ রয়েছে। এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি পেলে কাজ শুরু করবেন বলে নিশ্চিত করেন তিনি।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
- » বাংলাদেশ সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ ফেনী জেলা আহবায়ক কমিটি গঠিত
- » ফেনী বন্ধুসভার বৃক্ষরোপণ ও বিতরণ
- » আমার দেশ সম্পাদকের রত্নগর্ভা মাতা অধ্যাপিকা মাহমুদা বেগমের মাগফিরাত কামনায় ফেনীতে দোয়া
- » গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে ফেনীতে সাংবাদিকদের মানববন্ধন
- » ফেনীতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাংবাদিকদের উপর হামলার গোপন পরিকল্পনা ফাঁস
- » জনতার অধিকার পার্টির চেয়ারম্যানের উপর হামলা, সংবাদ সম্মেলন
- » ফেনী পৌর বিএনপির সদস্য নবায়ন কর্মসূচি উদ্বোধন
- » ফেনীতে হেফাজতের দোয়া মাহফিলে আজিজুল হক ইসলামাবাদী- ‘আলেম সমাজ ঐক্যবদ্ধ থাকলে দেশে আর ফ্যাসিবাদ সৃষ্টি হবে না’
- » ফেনীতে হাফেজ তৈয়ব রহ. স্মরণে দোয়ার মাহফিল
- » ছাত্র জনতার ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ফেনীতে বিএনপি’র বর্ণাঢ্য বিজয় মিছিল, সমাবেশ “গণহত্যার দ্রুত বিচার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি”